নাচোল বার্তা নিউজ ডেস্ক রিপোর্ট:
সুপারফুড চিয়া সিড চাষ করে তাক লাগিয়েছেন নাচোল উপজেলার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী জাহাঙ্গীর আলম। তিনি গত বছর প্রথমবারের মতো ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিয়া বীজ সংগ্রহ করে ৩৩ শতাংশ জমিতে চাষ করেন। ফলন হয়েছিল আশানুরূপ। ভালো ফলন পেয়ে এ বছর কৃষি বিভাগের পরামর্শে আবারো ৩৩ শতাংশ জমিতে চিয়া বীজ বপণ করেছেন তিনি। এ নতুন ফসল চাষে খরচের তুলনায় লাভ অনেক বেশি হওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন নাচোল উপজেলার এই শিক্ষার্থী।
তার দেখাদেখি নাচোল উপজেলার অনেকে চিয়া সিড চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন।
নাচোল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চিয়া বীজ মধ্য আমেরিকার একটি উদ্ভিদ। পুদিনার একটি প্রজাতি। বিভিন্ন পোষক পদার্থের উপস্থিতির জন্য এটিকে সুপারফুড বলা হয়ে থাকে। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে চিয়া সিড বপন করতে হয়। ফলন ঘরে তোলা যায় মার্চের শেষ থেকে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে।
উদ্যোক্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বাজারে এই ফসলের মূল্য অনেক বেশি। গত বছর প্রথমবারের মতো ৩৩ শতাংশ জমিতে চিয়া বীজের চাষ করেছিলাম, এবারো ৩৩ শতাংশ জমিতে চিয়া বীজ রোপণ করেছি। আশা করছি সব মিলে ১০০ কেজি চিয়া বীজ পাব। প্রতি বিঘা জমিতে চিয়া বীজ চাষ করতে ২ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ চিয়া বীজ ২০ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। চিয়া সিড চাষে একটা সেচ দিলেই হয়। এবং ১০৫ দিনের মাথায় ফসল কর্তন করা যায়।
নাচোল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ রায়হানুল ইসলাম বলেন, নাচোলের মাটি ও আবহাওয়া চিয়া বীজ চাষে অত্যন্ত উপযোগী। যে কারণে চিয়া বীজ উৎপাদনের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। নাচোল উপজেলার ভূজইল গ্রামের স্মার্ট কৃষক জাহাঙ্গীর আলম চিয়া বীজ চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে বেশ লাভবান হয়েছেন। চিয়া বীজ চাষে কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ ও পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে । উপজেলায় আগামীতে আরো বেশি কৃষককে চিয়া বীজ উৎপাদনের জন্য কৃষি বিভাগ কাজ করবে।
বাউ-চিয়া বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও বাউ- চিয়া সিড বিশেষজ্ঞ ডা: আলমগীর হোসেন বলেন , নানা ঔষুধি গুণসমৃদ্ধ ‘চিয়া সিড’-এর বৈজ্ঞানিক নাম ‘সালভিয়া হিসপানিকা’। চিয়া বীজকে বলা হয় সুপারফুড। চিয়া বীজে রয়েছে শর্করা, ফাইবার, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাসসহ একাধিক খনিজ পদার্থ। এ ছাড়া একাধিক ভিটামিন ও প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে ঔষধি গুণসম্পন্ন এই চিয়া সিড। ফলে শরীরে পাচনতন্ত্র ও মেটাবলিজমের জন্য অত্যন্ত উপকারী চিয়া সিড। শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতেও সহায়ক। চিয়া বীজ খেলে শরীরে কোলেস্টেরলের সমস্যা কমে। পাশাপাশি রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। শরীরে পানির চাহিদা পূরণ থেকে ইলেকট্রলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে চিয়া বীজের গুরুত্ব অনেক।